Ad

কুরআন শিক্ষাদানকারীর মর্যাদা

 


 *কুরআন শিক্ষাদানকারীর মর্যাদা-

আরবী****

 

১। হযরত উসমান ( রাঃ ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআন শিক্ষা করে এবং অন্যদের তা শিক্ষা দেয়-  তিনিই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ( সহীহ বুখারী )

 

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বানীর তাৎপর্য এই যে, যে ব্যক্তি নিজে সর্বপ্রথম কুরআন থেকে হিদায়াত লাভ করে, অতঃপর আল্লাহর বান্দাদের কাছে তা পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করে – তোমাদের মধ্যে সেই সর্বোত্তম মানুষ।


*কুরআনের শিক্ষাদান দুনিয়ার সর্বোত্তম ধন-সম্পদের চেয়েও উত্তম -

আরবী*****

 

২। হযরত উকবা ইবনে আমের ( রাঃ ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ( তাঁর হুজরা  থেকে ) বেড়িয়ে আসলেন আমরা তখন সুফফায় ছিলাম তিনি বললেন, তোমাদের কে এটা পছন্দ করে যে, সে প্রতিদিন বোথহান বা আকীকে যাবে এবং উচ্চ কুজ বিশিষ্ট দুটি উট নিয়ে আসবে কোনরূপ অপকর্ম বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা ছাড়াই? আমরা সবাই বললাম হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের প্রত্যেকেই এটা পছন্দ করে তিনি বললেন, তোমাদের কোন ব্যক্তি মসজিদে যাবে এবং আল্লাহর কিতাব থেকে দুটি আয়াত লোকদের শিক্ষা দেবে অথবা পাঠ করবে, তার এ কাজ প্রতিদিন দুটি করে উট লাভ করার চেয়েও অধিক মূল্যবান যদি সে তিনটি আয়াত শিক্ষা দেয় অথবা পড়ে তাহলে এটা তিনটি উট লাভ করার চেয়ে উত্তম এভাবে যতগুলো আয়াত শিখানো হবে অথবা পড়বে তত সংখ্যক উট লাভ করার চেয়ে উত্তম -----( সহীহ মুসলিম )

 

মসজিদের নববীর চত্তরকে সুফফা বলা হতো। এর উপরে ছাপরা দিয়ে তা মসজিদে নববীর সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছিলো। মক্কা মুয়াযযামা এবং আরবের অন্যান্য এলাকা থেকে যেসব মুসলিম হিজরত করে মদিনায় এসেছিলেন তারাই এখানে অবস্থান করতেন। তাঁদের কোন বাড়ি-ঘরও ছিলো না এবং আয়- উপার্জনও ছিলো না। মদীনার আনসারগন এবং অপরাপর মুহাজিরগন যে সাহায্য করতেন তাতেই তাঁদের দিন চলতো। এসব লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মুখে সারাক্ষন উপস্থাইত থাকতেন। বলতে গেলে তারা ছিলেন একটি স্থায়ী আবাসিক প্রতিস্থানের ছাত্র। বোতহান এবং আকীক মদিনা তাইয়েবার সাথে সংযুক্ত দুটি উপত্যকার নাম। একটি মদিনার দক্ষিন পার্শে এবং অপরটি উত্তর-পশ্চিম পাশে অবস্থিত ছিল। এই দুটি উপত্যকা এখনো বর্তমান আছে। ততকালে এই দুই স্থানে উটের বাজার বসতো। হুজুর ( সাঃ ) অর্থহীন, সম্পদহীন সুফফাবাসীদের সম্বোধন করে বললেন, ভাই, তোমাদের কে দৈনিক বোতহান এবং আকীকে গিয়ে উচ্চ কুজ বিশিষ্ট দুটি করে উট বিনামূল্যে নিয়ে আসতে চায়? তারা আরজ করলেন- হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের প্রত্যেকেই তা ভালবাসবে। অতঃপর তিনি বললেন- তোমাদের মধ্যে কেউ অপরকে কুরআনের দুটি আয়াত শিক্ষা দিলে তা বিনামূল্যে দুটি উৎকৃষ্ট উট লাভ করার চেয়েও উত্তম। এভাবে সে যতগুলো আয়াত কাউকে শিক্ষা দেবে তা তত পরিমান উট পাওয়ার চেয়েও উত্তম বলে বিবেচিত হবে। লক্ষ্য করুন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রশিক্ষন পদ্ধতি কি অসাধারন ছিল। তিনি জানতেন, এই সুফফাবাসীরা শুধু এ কারনে নিজেদের বাড়ি- ঘর পরিত্যাগ করে চলে এসেছেন যে, তারা আল্লাহর দ্বীনকে গ্রহন করে নিয়েছিলেন এবং পার্থিব সুযোগ- সুবিধাকে তারা মোটেই পছন্দ করতেন না। তাঁদেরকে বাধ্য হয়ে নিজেদের বাড়ি- ঘর ছেড়ে চলে আসতে হয়েছে। শয়তান তাঁদের এই নিঃসম্বল অবস্থার সুযোগ নিতে পারে এই আশংকায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুকৌশলে তাঁদের চিন্তাধারার মোড় ঘুরিয়ে দিলেন। এবং বললেন- তোমরা যদি আল্লাহর বান্দাদের কুরআন পাঠ করে শুনাও এবং তাঁদেরকে কুরআন শিক্ষা দাও তাহলে এটা তোমাদের হাতে বিনামূল্যে উট এসে যাওয়ার চেয়েও অধিক উত্তম হবে। তোমরা যদি অন্যদের কাছে গিয়ে তাঁদেরকে কুরআনের দুটি আয়াত শিখিয়ে দাও তাহলে এটা বিনামূল্যে দুটি ভালো উট লাভ করার চেয়ে অনেক কল্যাণকর। এভাবে তাঁদের মন- মগজে এ কথা বসিয়ে দেয়া হয়েছে যে, যদি তোমরা আল্লাহর দীনের উপর ঈমান এনে থাকো এবং এই দীনের খাতিরেই হিজরতের পথ বেছে নিয়ে এখানে এসে থাকো তাহলে এখন সেই দীনের কাজেই তোমাদের সময় এবং শ্রম ব্যয়িত হওয়া উচিৎ যে জন্য তোমরা বাড়ি- ঘর ছেড়ে চলে এসেছ। তোমরা দুনিয়াকে পাওয়ার আকাংখা করার পরিবর্তে বরং তোমাদের সময় দীনের কাজে ব্যয়িত হওয়া উচিৎ। এতে আল্লাহর সাথে তোমাদের সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হতে থাকবে এবং আল্লাহর সৃষ্টির সেবা করে এবং তাঁর বান্দাদের সত্য- ন্যায়ের পথ দেখিয়ে দিয়ে তোমরা আল্লাহ পাকের অনুগ্রহ লাভের অধিক উপযোগী হতে পারো।

 

এসব লোককেই তাঁদের ধৈর্য এবং সহিষ্ণুতার কারনে আল্লাহ তায়ালা পার্থিব জীবনেই বিশাল সাম্রাজ্যের মালিক বানিয়ে দিলেন। তারা নিজেদের জীবনেই দেখে নিলেন যে, মানুষ যদি ধৈর্য সহকারে আল্লাহর দীনের পথ অবলম্বন করে তাহলে এর ফল কি হয়।


 *কুরআনের শিক্ষাদান দুনিয়ার সর্বোত্তম ধন-সম্পদের চেয়েও উত্তম-

আরবী*****

 

২। হযরত উকবা ইবনে আমের ( রাঃ ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ( তাঁর হুজরা  থেকে ) বেড়িয়ে আসলেন আমরা তখন সুফফায় ছিলাম তিনি বললেন, তোমাদের কে এটা পছন্দ করে যে, সে প্রতিদিন বোথহান বা আকীকে যাবে এবং উচ্চ কুজ বিশিষ্ট দুটি উট নিয়ে আসবে কোনরূপ অপকর্ম বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা ছাড়াই? আমরা সবাই বললাম হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের প্রত্যেকেই এটা পছন্দ করে তিনি বললেন, তোমাদের কোন ব্যক্তি মসজিদে যাবে এবং আল্লাহর কিতাব থেকে দুটি আয়াত লোকদের শিক্ষা দেবে অথবা পাঠ করবে, তার এ কাজ প্রতিদিন দুটি করে উট লাভ করার চেয়েও অধিক মূল্যবান যদি সে তিনটি আয়াত শিক্ষা দেয় অথবা পড়ে তাহলে এটা তিনটি উট লাভ করার চেয়ে উত্তম এভাবে যতগুলো আয়াত শিখানো হবে অথবা পড়বে তত সংখ্যক উট লাভ করার চেয়ে উত্তম -----( সহীহ মুসলিম )

 

মসজিদের নববীর চত্তরকে সুফফা বলা হতো। এর উপরে ছাপরা দিয়ে তা মসজিদে নববীর সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছিলো। মক্কা মুয়াযযামা এবং আরবের অন্যান্য এলাকা থেকে যেসব মুসলিম হিজরত করে মদিনায় এসেছিলেন তারাই এখানে অবস্থান করতেন। তাঁদের কোন বাড়ি-ঘরও ছিলো না এবং আয়- উপার্জনও ছিলো না। মদীনার আনসারগন এবং অপরাপর মুহাজিরগন যে সাহায্য করতেন তাতেই তাঁদের দিন চলতো। এসব লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মুখে সারাক্ষন উপস্থাইত থাকতেন। বলতে গেলে তারা ছিলেন একটি স্থায়ী আবাসিক প্রতিস্থানের ছাত্র। বোতহান এবং আকীক মদিনা তাইয়েবার সাথে সংযুক্ত দুটি উপত্যকার নাম। একটি মদিনার দক্ষিন পার্শে এবং অপরটি উত্তর-পশ্চিম পাশে অবস্থিত ছিল। এই দুটি উপত্যকা এখনো বর্তমান আছে। ততকালে এই দুই স্থানে উটের বাজার বসতো। হুজুর ( সাঃ ) অর্থহীন, সম্পদহীন সুফফাবাসীদের সম্বোধন করে বললেন, ভাই, তোমাদের কে দৈনিক বোতহান এবং আকীকে গিয়ে উচ্চ কুজ বিশিষ্ট দুটি করে উট বিনামূল্যে নিয়ে আসতে চায়? তারা আরজ করলেন- হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের প্রত্যেকেই তা ভালবাসবে। অতঃপর তিনি বললেন- তোমাদের মধ্যে কেউ অপরকে কুরআনের দুটি আয়াত শিক্ষা দিলে তা বিনামূল্যে দুটি উৎকৃষ্ট উট লাভ করার চেয়েও উত্তম। এভাবে সে যতগুলো আয়াত কাউকে শিক্ষা দেবে তা তত পরিমান উট পাওয়ার চেয়েও উত্তম বলে বিবেচিত হবে। লক্ষ্য করুন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রশিক্ষন পদ্ধতি কি অসাধারন ছিল। তিনি জানতেন, এই সুফফাবাসীরা শুধু এ কারনে নিজেদের বাড়ি- ঘর পরিত্যাগ করে চলে এসেছেন যে, তারা আল্লাহর দ্বীনকে গ্রহন করে নিয়েছিলেন এবং পার্থিব সুযোগ- সুবিধাকে তারা মোটেই পছন্দ করতেন না। তাঁদেরকে বাধ্য হয়ে নিজেদের বাড়ি- ঘর ছেড়ে চলে আসতে হয়েছে। শয়তান তাঁদের এই নিঃসম্বল অবস্থার সুযোগ নিতে পারে এই আশংকায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুকৌশলে তাঁদের চিন্তাধারার মোড় ঘুরিয়ে দিলেন। এবং বললেন- তোমরা যদি আল্লাহর বান্দাদের কুরআন পাঠ করে শুনাও এবং তাঁদেরকে কুরআন শিক্ষা দাও তাহলে এটা তোমাদের হাতে বিনামূল্যে উট এসে যাওয়ার চেয়েও অধিক উত্তম হবে। তোমরা যদি অন্যদের কাছে গিয়ে তাঁদেরকে কুরআনের দুটি আয়াত শিখিয়ে দাও তাহলে এটা বিনামূল্যে দুটি ভালো উট লাভ করার চেয়ে অনেক কল্যাণকর। এভাবে তাঁদের মন- মগজে এ কথা বসিয়ে দেয়া হয়েছে যে, যদি তোমরা আল্লাহর দীনের উপর ঈমান এনে থাকো এবং এই দীনের খাতিরেই হিজরতের পথ বেছে নিয়ে এখানে এসে থাকো তাহলে এখন সেই দীনের কাজেই তোমাদের সময় এবং শ্রম ব্যয়িত হওয়া উচিৎ যে জন্য তোমরা বাড়ি- ঘর ছেড়ে চলে এসেছ। তোমরা দুনিয়াকে পাওয়ার আকাংখা করার পরিবর্তে বরং তোমাদের সময় দীনের কাজে ব্যয়িত হওয়া উচিৎ। এতে আল্লাহর সাথে তোমাদের সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হতে থাকবে এবং আল্লাহর সৃষ্টির সেবা করে এবং তাঁর বান্দাদের সত্য- ন্যায়ের পথ দেখিয়ে দিয়ে তোমরা আল্লাহ পাকের অনুগ্রহ লাভের অধিক উপযোগী হতে পারো।

 

এসব লোককেই তাঁদের ধৈর্য এবং সহিষ্ণুতার কারনে আল্লাহ তায়ালা পার্থিব জীবনেই বিশাল সাম্রাজ্যের মালিক বানিয়ে দিলেন। তারা নিজেদের জীবনেই দেখে নিলেন যে, মানুষ যদি ধৈর্য সহকারে আল্লাহর দীনের পথ অবলম্বন করে তাহলে এর ফল কি হয়।


 *কুরআন সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ-

আরবী****

 

 হযরত আবু হুরাইরাহ ( রাঃ ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- তোমাদের কেউ নিজ বাড়িতে ফিরে গিয়ে তাঁর ঘরে তিনটি মোটা তাজা এবং গর্ভবতী উস্ট্রী পেতে কি পছন্দ করে? আমরা বললাম, হ্যাঁ তিনি বললেন- তোমাদের কারো নামাজে কুরআনের তিনটি আয়াত পাঠ করা তিনটি মোটা তাজা এবং গর্ভবতী উস্ট্রীর মালিক হওয়ার তুলনায় অধিক কল্যাণকর --------( সহীহ মুসলিম )

 

            মোটা তাজা ও গর্ভবতী উস্ট্রী আরবদের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হতো। এ জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাধ্যমে উদাহরণ পেশ করে বলেছেন- যদি তোমরা নামাজের মধ্যে কুরআনের তিনটি আয়াত পাঠ করো তবে টা তোমাদের ঘরে বিনামূল্যের তিনটি উট এসে হাজির হয়ে যাওয়ার চেয়ে অধিক কল্যাণকর। এই উদাহরণের মাধ্যমে রাসুলুল্লা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমান সর্বসাধারণের মধ্যে এ কথা বদ্ধমূল করে দিতে চেয়েছেন যে, কুরআন তাঁদের জন্য কতো বড় রহমতের বাহন এবং কুরআনের আকারে কতো মূল্যবান সম্পদ তাঁদের হস্তগত হয়েছে। তাঁদের মনমগজে এই অনুভূতি জাগ্রত করা হয়েছে যে, তাঁদের কাছে যেটা বড় থেকে বিরাটতর সম্পদ হতে পারে – কুরআন এবং এর একটি আয়াত তাঁর চেয়েও অধিক বড় উত্তম সম্পদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url