Ad

যার সাথে ঈর্ষা করা যায়।

 


 হযরত ইবনে উমর ( রঃ ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- দুই ব্যক্তি ছাড়া কেউ ঈর্ষার পাত্র নয় এক, যে ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা কুরআনের জ্ঞান দান করেছেন এবং সে দিনরাত তা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ( অর্থাৎ নামাজে দণ্ডায়মান অবস্থায় তেলাওয়াত করছে অথবা তাঁর প্রচার- প্রসার বা শিক্ষা দেয়ার কাজে ব্যপৃত রয়েছে ) দুই, যে ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা ধন সম্পদ দান করেছেন এবং সে দিনরাত তা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে ----( সহীহ বুখারী ও মুসলিম )

 

    এ হাদীসের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈমানদার- সম্প্রদায়ের চিন্তা চেতনায় যে কথা বসিয়ে দিয়েছেন, তা হচ্ছে- কোন ব্যক্তির পার্থিব উন্নতি, প্রাচুর্য এবং নামকাম কোন ঈর্ষার বস্তুই নয়। ঈর্ষার বস্তু কেবল দুই ব্যক্তি। এক, যে ব্যক্তি কুরআনের জ্ঞান অর্জন করেছে এবং সে দিনরাত নামাজের মধ্যে তা পাঠ করার জন্য দণ্ডায়মান থাকে, অথবা আল্লাহর বান্দাদের তা শেখানোর কাজে ব্যস্ত থাকে, তা শেখার জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে এবং এর প্রচার করে। দুই, যে ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা ধন সম্পদ দান করেছেন এবং সে তাঁর অপচয়  না করে, বিলাসিতায় ও পাপ কাজে ব্যয় না করে বরং দিনরাত আল্লাহর নির্দেশিত পথে তা ব্যয় করে - - এ ব্যক্তিই ঈর্ষার পাত্র।

 

  এই সেই শিক্ষা যার মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লোকদের দৃষ্টি ভঙ্গির আমূল পরিবর্তন সাধন করেন এবং তাঁদেরকে নতুন মূল্যবোধ দান করেন। তিনি তাঁদেরকে বলে দিলেন, মর্যাদা ও গুরুত্ব দান করার মতো জিনিস মূলত কি এবং মানবতার উচ্চতম নমুনাই বা কি যার ভিত্তিতে তাঁদের নিজেদের গঠন করার আকাংখা ও প্রচেষ্টা চালানো উচিৎ।

 

  হাদীসের মূল পাঠে বিদ্বেষ শব্দ ব্যবহার করার পরিবর্তে ঈর্ষা শব্দ ব্যবহার করার কারন হচ্ছে – ঈর্ষার এমন একটি জিনিস যা হিংসা বিদ্বেষের মতো মানুষের মনে আগুন লাগিয়ে দেয় না। হিংসা বিদ্বেষ যদিও ঈর্ষারই একটি ভাগ কিন্তু তা এতটা তীব্র যে এর কারনে মানুষের মনে আগুনের মতো একটি উত্তপ্ত জিনিস লেগেই থাকে। হাসাদ যেন এমন একটি গরম পাত্র যা প্রায়ই সারা জীবন মানুষের মনে আগুন জালিয়ে রাখে। এজন্য এখানে ঈর্ষার আবেগের তীব্রতা প্রকাশ করার জন্যে হাসাদ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।

 

  হাসাদের মধ্যে মূলত দোষের কারন হচ্ছে এই যে, মানুষ চায় অমুক জিনিসটি সে না পেয়ে বরং আমি পেয়ে যাই অথবা তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেয়া হোক এবং আমাকে তা দেয়া হোক অথবা তা যদি আমার ভাগ্যে না জোটে তাহলে এটা যেন তারও হাতছাড়া হয়ে যায়। এটাই হচ্ছে হাসাদের মূল অর্থ। কিন্তু এখানে হাসাদ শব্দটি এই অর্থে ব্যবহার হয় নি।

 

 এখানে কেবল ঈর্ষার অনুভুতির প্রখরতা ব্যক্ত করার জন্যই হাসাদ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ তোমাদের মনে যদি ঈর্ষার আগুন লাগতেই চায় তাহলে এই উদ্দেশ্যেই লাগা উচিৎ যে, তোমরা দিনরাত কুরআন শেখা এবং শেখানোর কাজে ব্যাপৃত থাকো। অথবা তুমি সম্পদশালী হয়ে থাকলে তোমার এই সম্পদ অকাতরে আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করো, রাতদিন সর্বদা আল্লাহর সৃষ্টির কল্যাণ সাধনের জন্য, তাঁর দীনের প্রচার- প্রতিষ্ঠার জন্য তা ব্যয় করতে থাকো। এভাবে তুমি অন্যদের জন্যও ঈর্ষার পাত্রে পরিনত হয়ে যাও।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url