Ad

আল্লাহর সাথে সম্পর্কের বাস্তব রূপ কী?

 

আল্লাহর সাথে সম্পর্কের বাস্তব রূপ কী?

 

আল্লাহর উপর ঈমান আনলে আল্লাহর সাথে বান্দাহর বিশেষ সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তায়াল এ সম্পর্ককে সূরা নাস এ তিনভাবে প্রকাশ করেছেনে।

 

১. رَبِّ النَّاس মানুষের রব বা প্রতিপালক। যাবতীয় প্রয়োজন পূরণকারী রক্ষণাবেক্ষণকারী ইত্যাদি। আর মানুষ তার দয়ার ভিখারি তার একান্ত অনুগৃহীত ও প্রতিপালিত।

 

২. مَلِكِ النَّاسِ   মানুষের বাদশাহ। তিনি রাজা আর মানুষ তার প্রজা। কোনো অবস্থায়ই কারো পক্ষে তার রাজত্বের বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। তার রাজ্যের নিয়ম কানুন ও বিধি বিধান মানুষ আবদ্ধ। ভালো বা মন্দ কিছু করার ইচ্ছা ও চেষ্টার ইখতিয়ারটুকু শুধু মানুষকে দেওয়া হয়েছে। কিন্ত কোন কাজ সমাধা করার কোনো ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। কর্ম সমাধা করা আল্লাহর উপর সম্পূর্ণ নিভরশীল। শুধু ইচ্ছা ও চেষ্টা করা হলেই মানুষ কর্মের পুরস্কার বা শাস্তি পাবে। কর্ম সম্পন্ন না হলেও এর বদলা পাবে। ইচ্ছা ও চেষ্টার সামান্য ইখতিয়ারটুকু ছাড়া আল্লাহ তার প্রজাকে ক্ষমতাই দেননি।

 

৩. إِلَٰهِ النَّاسِ  আল্লহই মানুষের একমাত্র ইলাহ মাবুদ হুকুমদাতা প্রভু ও মুনিব। তার হুকুমের বিরোধী কোনো হুকুম মানার অধিকার মানুষের নেই।

 

রাসূল (সাঃ) বলেনঃ

 

স্রষ্টাকে অমান্য করে কোনো সৃষ্টির আনুগত্য চলে না।

 

এসব সম্পর্কের স্বাভাবিক দাবি

 

যে আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর উপর ঈমান আনে তার ঈমানের দাবি সে পূরণ করতে সক্ষম হয়।

 

১. সে আল্লাহর একমাত্র রব হিসেবে মেনে নেয়। যা কিছু সে দুনিয়ায় ভোগ করে এর জন্য সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর প্রতিই জ্ঞাপন করে। তার দেহে যত নিয়ামত আছে তার অন্তরে যত সুকামনা আসে তার মনে যত সুচিন্তা আসে নেক কাজের যত ইচ্ছা মনে জাগে সৎকাজের জন্য চেষ্টা করার যতটুকু তাওফীক হয় আল্লাহর সৃষ্টি জগতের যা কিছু ব্যবহার করা ও ভোগ করার সুযোগ সে পায় এ সকল বিষয়েই সে একমাত্র আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জানায়। একমাত্র তারই প্রতি কৃতজ্ঞতায় মাথা নত করে এবং মনে তারই অনুগ্রহের তৃপ্তি বোধ করে। প্রতিটি আপদ বিপদকে তার পক্ষ থেকে মনে করে। সে আল্লাহকেই একমাত্র রিযকদাতা ও প্রয়োজন পূরণকারী মনে করে। কঠিন মুসীবতেও সে পেরেশান হয় না। কোনো অবস্থায়ই তার রব থেকে নিরাশ হয় না। সব কিছুর মধ্যে আল্লাহ তার জন্য মঙ্গল ও কল্যাণ রেখেছেন বলে বিশ্বাস করে। একমাত্র তারই উপর নির্ভর করে মনে সান্তনা বোধ করে।

 

২. সে আল্লাহকে একমাত্র বাদশাহ মনে করে এবং আর কোনো শক্তির পরওয়া সে করে না। কোনো বড় শক্তিই তার নিকট বড় নয়। যিনি সকল বাদশাহর বাদশাহ সে নিজেকে তারই স্নেহভাজন প্রজা মনে করে। কারো দাপটে সে ভীত হয় না। আল্লাহ ছাড়া আর কোনো শক্তিকে ভয় করার সামান্য প্রয়োজনও সে বোধ করে না। কেউ তার কোনো ক্ষতি করতে পারে বলে সে মনে করে না। সে পরম সাহসী ও চরম নির্ভীক। দুনিয়া ও আখিরাতে সে আল্লাহকেই একমাত্র ওলী বা স্নেহপরায়ণ অভিভাবক মনে করে। সর্বাবাস্থায় সে অন্তরে প্রাশান্তি বোধ করে। কোনো অবস্থায়ই বিচলিত হওয়া প্রয়োজন মনে করে না। নিজেকে সে আল্লাহর সৈনিক মনে করে এবং তার বাদশাহর রাজত্ব কায়েম করা ও কায়েম রাখা সবচেয়ে বড় কর্তব্য মনে করে। আল্লাহর অপছন্দনীয় সবকিছু উৎখাত করার জযবা রাখে। সে আল্লাহ তাআলাকেই আর সব কিছু থেকে ভালোবাসে তার সন্তুষ্টি লাভের চেয়ে বড় কোনো আকাঙক্ষা তার থাকে না। মালিকের সন্তষ্টির জন্য জান কুরবান করার মধ্যেই সে গৌরব বোধ করে। শয়তানের রাজত্ব উৎখাত করে আল্লাহর রাজত্ব কায়েমের লক্ষ্যে জান ও মাল কুরবান করার জন্য সর্বাত্মাক চেষ্টা করাই জান্নাত লাভের সোপান মনে করে।

 

৩. আল্লহই একমাত্র ইলাহ বলে বিশ্বাস করে। তার হুকুমের বিরোধী কারো হুকুম পালান করতে সে এক বিন্দু প্রস্তুত নয়। তার আদেশ পালন করা ও তার নিষেধ থেকে নিজেকে বিরত রাখাই তার দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবন ও আখিরাতের চিরস্থায়ী জীবনের সাফল্যের একমাত্র উপায় বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। এটাই আল্লাহর নৈকট্য লাভের একমাত্র পথ বলে সে মনে করে। দুনিয়ার শাস্তি ও আখিরাতের মুক্তির জন্য আর কোন বিকল্প উপায় আছে বলে সে বিশ্বাস করে না।

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url