Ad

মৃত্যুর পরও কি আমল জারী থাকে?

 

মৃত্যুর পরও কি আমল জারী থাকে?

 

রাসূল (সাঃ) অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাষায় এ প্রশ্নের জওয়াব দিয়েছেন। ++

 

যখন কেউ মারা যায়া তখন তার আমল করা বন্দ হয়ে যায়। কিন্তু তিনটি জিনিস (বাকি থেকে যায়) ১. সদকায়ে জারিয়া (যে দান চালু থাকে), ২. এমন বিদ্যা যা থেকে উপকার পাওয়া যায় এবং ৩. এমন নেক সন্তান যে পিতা মাতার জন্য দোআ করতে থাকে।

 

এ হাদীসটি খুবই তাৎপর্যপূণ। মানুষ যে কাজ করে যদি তার জের চলতে থাকে তাহলে যতদিন জের চলবে ততদিন সে কাজ করছে বলে গণ্য হবে। যেমন –

 

১. জনগণের সুবিধার জন্য সওয়াব নিয়তে কেউ একটা রাস্তা তৈরি করে দেয় তাহলে যতদিন রাস্তাটি টিকে থাকবে ততদিন পর্যন্ত এর সওয়াব তার আমলনামায় জমা হতে থাকবে।

 

২. কেউ যদি তার সন্তানকে আল্লাহর নেক বান্দাহ হিসেবে গড়ে তোলে তহলে ঐ সন্তান আজীবন যত নেক আমল করবে এর সওয়াব সমপরিমাণে তার আমলনামায় জমা হতে থাকবে। তার সন্তান ও যদি তারই মতো তার সন্তান কে গড়ে তোলে তাহলে এর সওয়াবও তাদের আমলনামায় জমা হতে থাকবে।

 

৩. কেউ যদি সওয়াবের নিয়তে মানুষকে এমন কোনো বিদ্যা শিক্ষা দেয়, যা মানুষের জন্য কল্যাণকর, তাহলে যতদিন ঐ কল্যাণ চালু থাকবে ততদিন তার আমলনামায় সওয়াব জমা হতে থাকবে।

 

মন্দ কাজের বেলায়ও গুনাহ জারি থাকবে। যেমন –

 

১. কেউ যদি ডাকাতি করে এবং অন্য কাউকে ডাকাতি শিক্ষা দেয় তাহলে তার মৃত্যুর পর তার শাগরিদের গুনাহও উস্তাদের আমলনামায় জমা হে ব।

 

২. কেউ যদি কাউকে কোনো মন্দ কাজে সাহায্য করে বা উৎসাহিত করে তাহলে সে নিজে মন্দ কাজ না করলেও ঐ মন্দ কাজের গুনাহ তার আমলনামায় শামিল করা হবে।

 

৩. কেউ যদি কোনো কুপ্রথা বা নৈতিকতা বিরোধী কোনো কাজ সমাজে চালু করে, তাহলে তার মৃত্যুর পরও যতদিন তা সমাজে চালু থাকবে ততদিন এর গুনাহ তার আমলনামায় জমা হতে থাকবে।

 

এদ্বারা বুঝা গেল যে, কারো মুত্যুর সাথে সাথে তার আমলের একাউন্ট (হিসাবের খাতা) বন্ধ হয়ে যায় না। কোনো কোনো ভালো ও মন্দ কাজের জের কিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকতে পারে। তাই দুনিয়া ধ্বংস হওয়ার পরই আমলের খাতা লেখা বন্ধ হবে।

 

হাদীসে আছে, মানুষ যখন আমলনামা হাতে পাবে তখন তার কাজের দীর্ঘ হিসাব দেখে চিৎকার করে বলে উঠবে, হে আল্লাহ আমি তো এত কিছু করিনি। এতগুলো আমার হিসাবে কেমন করে এলো? একথা শুধু বদ লোকেরাই বলবে না, নেক লোকেরাও বলবে। উভয় প্রকার লোককে একই জওয়াব দেওয়া হবে – এটা ঠিক যে তুমি নিজে এত কিছু করনি, কিন্তু তুমি অন্যদেরকে শিক্ষা দিয়েছ, অন্যদেরকে উৎসাহ দিয়েছ, তোমাকে দেখে তারা শিখেছে বা উদ্বুদ্ধ হয়েছে। তাই অন্যদের আমরও তোমার হিসাবে ধরা হয়েছে। সূরা ইনফিতারের ৫নং আয়াতে বলা হয়েছে,++++

 

(কিয়ামতের পর) প্রত্যেক মানুষ জানতে পারবে যে, সে আগে কী (আমল) পাঠিয়েছে এবং পরে সে কী করেছে। এখানে আগে করেছে মানে জীবিতকালে করেছে আর পরে করেছে মানে মৃত্যুর পরে করা হয়েছে বলে ধরা হয়েছে।

 

তাই দুনিয়ায় অতি সতর্কতার সাথে আখিরাতের হিসাবের কথা খেয়ালে রেখে আমল করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url