Ad

মানুষের কেন আনুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন হয়?

 

মানুষের কেন আনুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন হয়?

 

মানুষ আর সব প্রণীর মতো নয়। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টির সেরা (আশরাফুল মাখলুকাত) হওয়ার মর্যাদা দান করেছেন। সকল প্রাণীই দেহসর্বস্থ, কিন্তু মানুষ দেহসর্বস্থ নয়। মানুষের দেহটি আসল মানুষ নয়। মানুষের দেহটি পশুই বটে। আসল মানুষটি কুরআনের ভাষায় ‘রূহ’। মানুষের দেহটি বস্তু দিয়ে তৈরি। মানুষ যা কিছু খায় ও পান করে তাতে যেসব বস্তু উপাদান রয়েছে সেসব উপাদান দিয়ে মানুষের দেহ তৈরি হয়েছে। তাই ঐসব খাদ্য ও পানীয় মানব দেহে ফিট হয়। অন্য কোনো উপাদান দেহ গ্রহণ করবে না। বিষ খেলে দেহের মৃত্যু হবেই।

 

‘রূহ’ কোন বস্তু সত্তা নয়। আমরা বিবেক বলতে যা বুঝি সেটা ‘রূহ’। এটা নৈতিক সত্তা। ভালো ও মন্দের চেতনাই হলো রূহ। এটাই আসল মানুষ। গোটা সৃষ্টিজগৎ মানুষের জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে বলে কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে। সব সৃষ্টিকে কাজে লাগানোর উপযোগী হিসেবেই দেহটি দান করা হয়েছে।

 

আল্লাহ তায়ালা সকল সৃষ্টির জন্যই প্রতিটি সৃষ্টির উপযোগী বিধান তৈরি করে তা নিজেই তাদের উপর চালু করে দিয়েছেন। মানুষের দেহের জন্যও তিনি বিধান তৈরি করে , নিজেই জারী করেছেন। এসব বিধান নবীর মাধ্যমে পাঠানো হয়নি। নবীর মাধ্যমে যেসব বিধান পাঠানো হয়েছে তা আল্লাহ্‌ নিজে জারী করেননা । নিজেই জারী করার সিদ্ধান্ত থাকলে নবীর মাধ্যমে পাঠাতেন না। নবীর নিকত ওহির মাধ্যমে প্রেরিত বিধান আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে চালু করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে নবীর উপর ও নবীর উপর যারা ইমান আনে তাদের উপর। বিধানটি অবশ্যই আল্লাহর। তার পক্ষ থেকে তার প্রতিনিধি (খলীফা) হিসেবে ঐ বিধান জারী করার দায়িত্বটিই খিলাফতের দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে করতে হলে মানুষকে তার ইচ্ছাশক্তি ও চেষ্টা সাধনা প্রয়োগ করতে হবে। এ কাজ সচেতনভাবে করা ছাড়া উপায় নেই। অন্যান্য প্রণী বিনা পরিকল্পনায় চেতনাহীণ ও গতানুগতিক ধারায় জীবন যাপন করে। আল্লাহ তায়ালা নিজেই তাদেরকে এভাবে পরিচালনা করেন। এর কোন চেতনা তাদের নেই।

 

মানুষকে সচেতনভাবে ও ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করে সুপরিকল্পিতভাবে তার দেহসত্তাকে পরিচালনা করা এবং সৃষ্টিজগতকে কাজে লাগিয়ে আল্লাহর দেওয়া বিধানকে বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েচে। এ দায়িত্বই আল্লাহর খিলাফতের দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে চেষ্টা করে অর্জন করতে হবে। তাই দুনিয়ায় মানুষের নৈতিক গুনাবলি অর্জনের জন্য সচেতনভাবে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হয়। অন্যান্য পশুর প্রয়োজনীয় গুনাবলী যেমন তাদের মধ্যে আপনা আপনিই সৃষ্টি হয়, মানুষের বেলায় তা হতে পারে না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url