Ad

কুরআন না বুঝে পাঠ করলেও কল্যাণের অধিকারী হওয়া যায়

 


*কুরআন না বুঝে পাঠ করলেও কল্যাণের অধিকারী হওয়া যায়- 

আরবী****

 

 হযরত আয়েশা ( রাঃ ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- কুরআনের জ্ঞানে পারদর্শী ব্যক্তি, কুরআন লিপিবদ্ধকারী সম্মানিত এবং পুতপবিত্র ফেরেশতাদের সাথে থাকবে আর যে ব্যক্তি কুরআন পড়তে গিয়ে আটকে যায় এবং অতি কষ্টে তা পাঠ করে তাঁর জন্যে দ্বিগুণ পুরস্কার রয়েছে --------( বুখারী ও মুসলিম)  

 

      কুরআন মাজীদেই বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালার দরবারে এই কুরআনকে মহাসম্মানিত এবং অতীব পবিত্র ফেরেশতাগণ লিপিবদ্ধ করে থাকেন। এ জন্য বলা হয়েছে – যে ব্যক্তি কুরআন থেকে জ্ঞান অর্জন করে, গভীর বুৎপত্তি সৃষ্টি করে এবং এ সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী হওয়ার চেষ্টা করে সে এই ফেরেশতাদের সাথী হবে। এর অর্থ এই নয় যে, সে এই ফেরেশতাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। বরং এর অর্থ হচ্ছে এই যে, এই ফেরেশতারা যে স্থান ও মর্যাদা লাভ করেছে তাকেও সেই মর্যাদা ও স্থানের অধিকারী করা হবে।

 

কোন কোন লোক এরূপ ধারনা করে যে, কুরআন শরীফ শুধু তেলাওয়াত করে আর কি ফায়দা- যদি সে তা না বুঝে পাঠ করে। কিন্তু এরূপ ধারনা পোষণ করা ঠিক নয়। কুরআন শরীফ শুধু তেলাওয়াত করার মাঝেও অনেক ফায়দা আছে। যেমন আপনি দেখতে পাবেন, এমন অনেক গ্রাম্য প্রকৃতির লোক রয়েছে যার মুখের ভাষা পরিস্কার রূপে ফুটেনা। সে অনেক কষ্ট করে এবং মাঝে মাঝে আটকে যাওয়া সত্ত্বেও কুরআন পড়তে থাকে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সম্পর্কেও বলেছেন যে, - তাঁর জন্যও দ্বিগুণ পুরস্কার রয়েছে। একটি পুরস্কার কুরআন তেলাওয়াত করার এবং অপরটি কুরআন পড়ার জন্য কষ্ট স্বীকার করার বা পরিশ্রম করার।

 

এখন কথা হলো, না বুঝে কুরআন পড়ার কি লাভ? এ প্রসংগে আমার প্রশ্ন হচ্ছে- আপনি কি পৃথিবীতে কখনো এমন কোন লোক দেখেছেন যে ইংরেজী বর্ণমালা পড়ার পর ইংরেজী ভাষার কোন বই নিয়ে পড়তে বসে গেছে এবং এর কিছুই তাঁর বুঝে আসছে না। চিন্তা করুন, কোন ব্যক্তি কেবল এই কুরআনের সাথেই এরূপ পরিশ্রম কেন করে। সে আরবী বর্ণমালার প্রাথমিক বই নিয়ে কুরআন পাঠ শেখার অনুশীলন করে, শিক্ষকের সাহায্যে তা শেখার চেষ্টা করে, ধৈর্য সহকারে বসে তা পড়তে থাকে যদিও তাঁর বুঝে আসে না কিন্তু তবুও তা পড়ার চেষ্টা করতে থাকে – সে শেষ পর্যন্ত কেন করে থাকে? যদি তাঁর অন্তরে ঈমান না থাকতো, কুরআনের প্রতি তাঁর বিশ্বাস না থাকতো, সে যদি এটা মনে না করতো যে, কুরআন আল্লাহর কালাম এবং তা পাঠে বরকত ও কল্যাণ লাভ করা যায়- তাহলে শেষ পর্যন্ত সে এই শ্রম ও কষ্ট কেন স্বীকার করে? পরিস্কার কথা হচ্ছে কুরআন আল্লাহর কালাম এবং কল্যাণময় প্রাচুর্যময় কালাম – এই বিশ্বাস ও প্রত্যয় নিয়েই সে তা পাঠ করার জন্য কষ্ট স্বীকার করে। অতএব, প্রতিদান না পাওয়ার কোন কারণই থাকতে পারেনা।

 

আবার এ কথাও মনে করা ঠিক নয় যে, এমন ব্যক্তির জন্য কুরআন শিক্ষা করা এবং তা বুঝার জন্য উপযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করা উচিৎ নয়। এ চেষ্টা তাঁকে অবশ্যই করতে হবে। কিন্তু যে লোক মনে করে যে, কুরআন যদি কারো বুঝে না আসে তবে তা পাঠ করা তাঁর জন্য অনর্থক এবং মূল্যহীন। এরূপ ধারনা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। কুরআন না বুঝে পড়ার মাঝেও নিশ্চিতই ফায়দা রয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url